কেউ বলে শাহ আব্দুল করীম কেউ বলে পাগল [ Keu Bole Shah Abdul Karim ]

কেউ বলে শাহ আব্দুল করীম কেউ বলে পাগল [ Keu Bole Shah Abdul Karim ]
লেবেল: স্টুডিও গুরুকুল [ Studio Gurukul ]
প্রযোজনা: সঙ্গীত গুরুকুল [ Music Gurukul ]
কাভার: পান্থ সরকার [ Pantha Sarker ]

 

তুমি থাকো বন্ধু হিয়ার

 

কেউ বলে শাহ আব্দুল করীম কেউ বলে পাগল

যার যা ইচ্ছা তাই বলে
যার যা ইচ্ছা তাই বলে
বুঝিনা আসল-নকল
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল।

জন্ম আমার সিলেট জেলায়, সুনামগঞ্জ মহকুমায়
বসত করি দিরাই থানায়, গাঁয়ের নাম হয় উজানধল
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল।
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল।

কালনী নদীর উত্তরপাড়ে, আছি এক কুঁড়েঘরে
পোস্ট-অফিস হয় ধল-বাজারে, ইউনিয়ন তাড়ল
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল।
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল।

পিতার নাম ইব্রাহিম আলী, সোজা-সরল আল্লার অলি
পীর-মুর্শিদের চরণ-ধুলি করিমের সম্বল
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল।
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল।

যার যা ইচ্ছা তাই বলে
যার যা ইচ্ছা তাই বলে
বুঝিনা আসল-নকল
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল
কেউ বলে শাহ আব্দুল করিম
কেউ বলে পাগল।

 

বাউল সঙ্গীত :

বাউল গান বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকায়ত সংগীতের একটি অনন্য ধারা। এটি বাউল সম্প্রদায়ের নিজস্ব সাধনগীত। আবহমান বাংলার প্রকৃতি, মাটি আর মানুষের জীবন জিজ্ঞাসা একাত্ম হয়ে ফুটে ওঠে বাউল গানে। আরো ফুটে ওঠে সাম্য ও মানবতার বাণী। এ ধারাটি পুষ্ট হয়েছে পঞ্চদশ শতাব্দীর তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মের ভাব, রাধাকৃষ্ণবাদ, বৈষ্ণব সহজিয়া তত্ত্ব ও সুফি দর্শনের প্রভাবে। কোনো কোনো ইতিহাসবিদের মতে, বাংলাদেশে বাউল মতের উদ্ভব সতের শতকে। এ মতের প্রবর্তক হলেন আউল চাঁদ ও মাধব বিবি।

গবেষকদের মতে, নিজ দেহের মধ্যে ঈশ্বরকে পাওয়ার তীব্র ব্যাকুলতা থেকে বাউল ধারার সৃষ্টি। বাউল সাধকদের সাধনার মাধ্যম হচ্ছে গান। সাধকের কাছে সাধন-ভজনের গূঢ়তত্ত্ব প্রকাশ পায় গানের মাধ্যমেই। প্রত্যেক মানুষের অন্তরে যে পরম সুন্দর ঈশ্বরের উপস্থিতি, সেই অদেখাকে দেখা আর অধরাকে ধরাই বাউল সাধন-ভজনের উদ্দেশ্য। বাউলের ভূখণ্ড তার দেহ, পথপ্রদর্শক তার গুরু, জীবনসঙ্গী নারী, সাধনপথ বলতে সুর, আর মন্ত্র বলতে একতারা। ভিক্ষা করেই তার জীবনযাপন। ভিক্ষা না পেলেও তার দুঃখ নেই। তার যত দুঃখ মনের মানুষকে না পাওয়ার।

বাউলের সাধনপথ যত দীর্ঘায়িত হয়, ব্যাকুলতা তত বাড়ে; দুঃখ যত গভীর হয়, গান হয় তত মানবিক। বাউলরা তাদের দর্শন ও মতামত বাউল গানের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করে থাকে। বাউল মতে সতেরো শতকে জন্ম নিলেও লালন সাঁইয়ের গানের মাধ্যমে উনবিংশ শতাব্দী থেকে বাউল গান ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন শুরু করে। তিনিই শ্রেষ্ঠ বাউল গান রচয়িতা হিসেবে বিবেচিত হন। ধারণা করা হয় তিনি প্রায় দু’হাজারের মত গান বেধেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ বাউল গান দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন যা তার রচনাতে লক্ষ করা যায়।

সাধারণত বাউলেরা যে সংগীত পরিবেশন করে তাকে বাউল গান বলে। বাউল গান বাউল সম্প্রদায়ের সাধনসঙ্গীত। এটি লোকসঙ্গীতের অন্তর্গত। এ গানের উদ্ভব সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য জানা যায় না। অনুমান করা হয় যে, খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতক কিংবা তার আগে থেকেই বাংলায় এ গানের প্রচলন ছিল। বাউল গানের প্রবক্তাদের মধ্যে লালন শাহ্, পাঞ্জু শাহ্, সিরাজ শাহ্ এবং দুদ্দু শাহ্ প্রধান।

এঁদের ও অন্যান্য বাউল সাধকের রচিত গান গ্রামাঞ্চলে ‘ভাবগান’ বা ‘ভাবসঙ্গীত’ নামে পরিচিত। কেউ কেউ এসব গানকে ‘শব্দগান’ ও ‘ধুয়া’ গান নামেও অভিহিত করেন। বাউল গান সাধারণত দুপ্রকার দৈন্য ও প্রবর্ত। এ থেকে সৃষ্টি হয়েছে রাগ দৈন্য ও রাগ প্রবর্ত। এই ‘রাগ’ অবশ্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রাগ নয়, ভজন-সাধনের রাগ।

কেউ বলে শাহ আব্দুল করীম

 

কেউ বলে শাহ আব্দুল করীম কেউ বলে পাগল [ Keu Bole Shah Abdul Karim ] কভার ঃ

 

আরও দেখুনঃ

মন্তব্য করুন